ঢাকা ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ১৬৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা আজ। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চের ২৩ ফেব্রুয়ারির (রোববার) কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে রয়েছে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার জামিনের আবেদন শুনানি। এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি আবেদনটি উপস্থাপনের পর আদালত রোববার দিন ঠিক করেছিলেন।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এই আবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন। ১৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। বেগম জিয়ার জামিনের খবর শোনার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী সমর্থক। কারাবন্দী অসুস্থ নেত্রীর জামিনের জন্য জেলায় জেলায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছেন অনেক কর্মী সমর্থক। গত শুক্রবার নেত্রীর মুক্তি এবং রোগমুক্তি কামনায় মসজিদে মসদিজে দোয়া করা হয়। জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগ বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বলেন, বেগম জিয়ার জামিনের জন্য অনেকেই রোজা রেখেছেন। নেত্রীর রোগমুক্তির জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে নেতাকর্মীরা। সারাদেশে নেত্রীর জামিনের খবর শোনার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন লাখ লাখ নেতাকর্মী। এর আগে ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বেগম জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। তবে আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) যদি সম্মতি দেন তাহলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের (আগাম চিকিৎসা) পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদন্ড পেয়ে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। আপিলের পর হাইকোর্টে যা বেড়ে ১০ বছর হয়। পরে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। তবে সেই আবেদন এখনো আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়। একই সাজা হয়েছে মামলার অপর তিন আসামিরও।
এরপর ওই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। পরে গত বছরের ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দন্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অর্থদন্ড স্থগিত ও সম্পত্তি জব্দ করার ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন। এরপর গত ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরে ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে জামিন চান খালেদা জিয়া। এ আবেদনের শুনানির পর ১২ ডিসেম্বর সেটি খারিজ হয়ে যায়।

এর আগে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ১০ ফেব্রুয়ারি বিএসএমএমইউ ভিসি কনক কান্তি বড়–য়া বরাবরে চিঠি লিখে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার ‘অসুস্থতার প্রকৃত তথ্য’ আদালতে তুলে ধরার অনুরোধ করেন। বোন সেলিমা ইসলাম ১১ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বন্দি বোনের ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্টের সমস্যার চিত্র তুলে ধরে মানবিক কারণ এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিন দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। অতপর শুরু হয় বেগম জিয়ার মুক্ত নিয়ে আলোচনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক কারাবন্দি বিএনপি নেত্রীর জামিন ইস্যুতে মন্তব্য করেন। তারা প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হলে সরকার জামিনের ব্যাপারে ভেসে দেখবে বলে জানান। দুদিন পর অবশ্য ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বেগম জিয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করে বিব্রত করবেন না। গত ২১ ফেব্রুয়ারিও বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। তবে তারা মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেননি। জানতে চাইলে ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, বেগম জিয়া আমাদের মা। তাঁর রোগমুক্তি এবং জামিনের জন্য সারাদেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী দোয়া ও মোনাজাত করেন। অনেকেই রোজা রেখে নেত্রীর জামিনের জন্য মান্নত করেছেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি গোলাম সরোয়ার বলেন, নেত্রীর মুক্তির জন্য লাখ লাখ নেতাকর্মী মুখিয়ে রয়েছেন। নেত্রীর জামিনের জন্য পীর-আউলিয়ার দরগায় মান্নত করার খবরও পাচ্ছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আজ খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি

আপডেট টাইম : ০৯:১৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা আজ। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চের ২৩ ফেব্রুয়ারির (রোববার) কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে রয়েছে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার জামিনের আবেদন শুনানি। এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি আবেদনটি উপস্থাপনের পর আদালত রোববার দিন ঠিক করেছিলেন।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এই আবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন। ১৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। বেগম জিয়ার জামিনের খবর শোনার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী সমর্থক। কারাবন্দী অসুস্থ নেত্রীর জামিনের জন্য জেলায় জেলায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছেন অনেক কর্মী সমর্থক। গত শুক্রবার নেত্রীর মুক্তি এবং রোগমুক্তি কামনায় মসজিদে মসদিজে দোয়া করা হয়। জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগ বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বলেন, বেগম জিয়ার জামিনের জন্য অনেকেই রোজা রেখেছেন। নেত্রীর রোগমুক্তির জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে নেতাকর্মীরা। সারাদেশে নেত্রীর জামিনের খবর শোনার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন লাখ লাখ নেতাকর্মী। এর আগে ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বেগম জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। তবে আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) যদি সম্মতি দেন তাহলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের (আগাম চিকিৎসা) পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদন্ড পেয়ে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। আপিলের পর হাইকোর্টে যা বেড়ে ১০ বছর হয়। পরে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। তবে সেই আবেদন এখনো আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়। একই সাজা হয়েছে মামলার অপর তিন আসামিরও।
এরপর ওই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। পরে গত বছরের ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দন্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অর্থদন্ড স্থগিত ও সম্পত্তি জব্দ করার ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন। এরপর গত ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরে ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে জামিন চান খালেদা জিয়া। এ আবেদনের শুনানির পর ১২ ডিসেম্বর সেটি খারিজ হয়ে যায়।

এর আগে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ১০ ফেব্রুয়ারি বিএসএমএমইউ ভিসি কনক কান্তি বড়–য়া বরাবরে চিঠি লিখে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার ‘অসুস্থতার প্রকৃত তথ্য’ আদালতে তুলে ধরার অনুরোধ করেন। বোন সেলিমা ইসলাম ১১ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বন্দি বোনের ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্টের সমস্যার চিত্র তুলে ধরে মানবিক কারণ এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিন দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। অতপর শুরু হয় বেগম জিয়ার মুক্ত নিয়ে আলোচনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক কারাবন্দি বিএনপি নেত্রীর জামিন ইস্যুতে মন্তব্য করেন। তারা প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হলে সরকার জামিনের ব্যাপারে ভেসে দেখবে বলে জানান। দুদিন পর অবশ্য ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বেগম জিয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করে বিব্রত করবেন না। গত ২১ ফেব্রুয়ারিও বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। তবে তারা মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেননি। জানতে চাইলে ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, বেগম জিয়া আমাদের মা। তাঁর রোগমুক্তি এবং জামিনের জন্য সারাদেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী দোয়া ও মোনাজাত করেন। অনেকেই রোজা রেখে নেত্রীর জামিনের জন্য মান্নত করেছেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি গোলাম সরোয়ার বলেন, নেত্রীর মুক্তির জন্য লাখ লাখ নেতাকর্মী মুখিয়ে রয়েছেন। নেত্রীর জামিনের জন্য পীর-আউলিয়ার দরগায় মান্নত করার খবরও পাচ্ছি।